রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
মামুন হোসেন, ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর)।।
শুরু হয়েছে আমন রোপণ মৌসুম। তাই কৃষক জমি প্রস্তুত শেষে ধান রোপণে ব্যস্ত সময় কাটালেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলায় আমন বীজের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।
পিরোজপুর ও ঝালকাঠী জেলায় একই পরিস্থিতি। পার্শবর্তি জেলা উপজেলা আমন আবাদ নিয়ে শঙ্কায় থাকলেও পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলায় আমন বীজের ভাল ফলনে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। কারণ, এ উপজেলার কৃষকরা আমন বীজের চাহিদা শেষে আমন কীজের চারা বেশ ভাল দামে বিক্রি করেছেন।
বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) উপজেলা বিভিন্ন স্থান ঘরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পার্শবর্তী উপজেলা মঠবাড়িয়া, কাঁঠালিয়া ও আমুয়াসহ দক্ষিণের বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা আমন বীজ সন্ধানে আসেন। আমন বীজের চারা ক্রয়শেষে যাওয়ার পথে ভান্ডারিয়া উপজেলার বটতলা সড়কে বসে আলাপ হয় মঠবাড়িয়া উপজেলার কৃষক মিঠু ও রাজুর সহ কয়েক জনের সাথে।
তারা বলেন- তাদের মঠবাড়ীয়া উপজেলার প্রায় ৯০ শতাংশ জমির আমন বীজ পঁচে যাওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছেন তাই তারা পার্শবর্তী উপজেলা থেকে এসব বীজ তাদের মাঠে রোপনের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তারা কেউ খোলা বীজ ক্ষেত, আবার কেউ পোন হিসেবে এ বীজ ক্রয় করেন।
তারা জানান, ১ পোন বীজ অর্থাৎ স্থানীয় ভাষায় ৮০ কোচা আমন বীজের মূল্য ১২‘শ থেকে ১৪‘শ টাকায় ক্রয় করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১ নম্বর ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রবীণ কৃষক মো. জাকির হোসেন, গৌরীপুর ইউনিয়নের মো. ইদ্রিস আলী, ইকড়ি ইউনিয়নের কবির সিকদার, ভান্ডারিয়া সদরের মো. বারেক হাওলাদার তাদের নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত আমন বীজের খোলা বিক্রি করেছেন ভাল দামে।
আবুল হোসেন নামের এক কৃষক জানান, ২০ কেজি আমন বীজের চারা রোপনে কৃষকের খরচ হয়েছে প্রায় ৩২ ‘শ টাকার মত আর তা বিক্রি হয়েছেন ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা মূল্যে।
উপজেলা উদ্ভিৎ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান জানান, আমাদের উপজেলায় প্রায় ১৫০টির অধিক কৃষক কৃষাণীর আইসিএম, আইপিএম নামে কৃষক সংগঠন আছে। তাদের ধান, পান, ফলদ, বনজ ও মৌসুমি সবজি চাষে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক ভাবে পরামর্শ দেয়ার ফলে আমাদের কৃষকরা সচেতন। তবে, তারা প্রাকৃতিক বিপদ আপদেও সচেতণ থাকেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দল্লাহ আল মামুন জানান, ভান্ডারিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার বাকি ছয়টি ইউনিয়নে কৃষকরা সচেতন থাকায় এ বছর নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আউশের ফলনও ভাল হয়েছে এবং বর্তমান আমন মৌসুমে টার্গেট ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭ ‘শ ৫০ হেক্টর জমি। এছাড়া, আমাদের কৃষকরা আমন বীজের চারা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত চারা বিক্রি করেছেন বেশ ভাল দামে। এ বছরের আউশ মৌসুমের টার্গেট ছিল ২৪‘শ হেক্টর কিন্তুু ফলন হয়েছে ২৫‘শ হেক্টর জমিতে। যা টার্গেটের চেয়ে ১‘শ হেক্টর বেশি উৎপাদন হয়।